FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

প্রতীক্ষা

প্রতীক্ষা

*

অনন্যা মেয়েটাকে আমি ৫ বছর থেকে ভালোবাসি।propose করেছিলাম ৪ বছর আগে।আজ ও accept করে নি।বেশ কিছুদিন থেকে ওর সাথে কথা হচ্ছে না।আজ suddenly ফোন দিয়ে বললো একটু দেখা করতে পারবা।খুব খুশি হলাম।ভাবলাম হয়তো আমার প্রতিক্ষা শেষ হবে।কিছুক্ষণ পর দেখা হলো।অনন্যা বললো তুমি হয়তো মনে করো আমি এতো নিষ্ঠুর কেন??আজ একটা গল্প বলবো।গল্পটা শুনে তোমাকে একটা প্রশ্ন করবো।গল্প শোনার পর বলবা আমি নিষ্ঠুর কিনা।অনন্যা গল্প শুরু করলো।অনেকদিন আগের কথা।শিশির নামে একটা ছেলে স্নেহা নামে একটা মেয়ে কে খুব পছন্দ করতো।কিন্তু মেয়েটাকে তার ভালোবাসার কথা কিভাবে বলবে এটা ভাবতেই অনেক সময় চলে যায়।স্কুল লাইফ থেকে শিশির স্নেহাকে ভালোবাসত।কিন্তু শিশির ছিলো খুবই লাজুক।কখনো তার ভালোবাসার কথা বলতে পারতো না।এমনকি স্নেহার সাথে স্কুল লাইফে কখনো কথা ও বলে নি।কলেজ লাইফে একদিন স্নেহা শিশির কে ডাকে।তারপর বলে আচ্ছা,তুমি নাকি অনেকের রসায়নের ব্যবহারিক করে দিয়েছ।আমাকে করে দিবা?শিশির বললো খাতাটা দিয়েন তাহলে করে দেব।এইটাই শিশির আর স্নেহার প্রথম কথোপকথন।তারপর থেকে মাঝে মাঝেই একটু একটু কথা হতো।তারপর স্নেহা একদিন কিছুটা জোর করেই শিশিরের ফোন। number নেই।তারপর থেকে ফোনে ও কথা হতো।একদিন স্নেহা বলে আচ্ছা আমরা এতোদিন থেকে কথা বলি তারপর ও কিন্তু আমাদের মাঝে খুব একটা ভালো বন্ধুত্ব হয় নি।তুমি আমার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানো না।আবার আমি ও তোমার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না।আচ্ছা আমরা কি ভালো বন্ধু হতে পারি না??শিশির খুব খুশি হলো।বললো অবশ্যই পারি।তারপর থেকে বন্ধুত্বটাও আগের চেয়ে ভালো হলো।শিশির ভেবেছিলো স্নেহাকে কলেজ লাইফে propose করবে।কিন্তু ও তো আর বুঝতে পারে নি অনন্যা ওর ভালো ফ্রেন্ড হয়ে যাবে।তাই বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার ভয়ে propose করছে না।যত দিন যাচ্ছে বন্ধুত্বটা তত গভীর হচ্ছে।শিশিরের স্বপ্নটা ও আস্তে আস্তে ভেঙে যেতে লাগলো।কারণ সে স্নেহাকে অনেক আগে থেকেই খুব ভালোবাসত কিন্তু এখন তো অনেক ভালো বন্ধু।তাই শিশির চাই না বন্ধুত্ব টা ভেঙে যাক।ভার্সিটি লাইফে একদিন স্নেহা হঠাৎ করেই শিশিরকে বলে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে।যদি ও বিয়েটা আগে থেকেই ঠিক ছিলো।ছেলে।অস্ট্রেলিয়া তে থাকে।ছেলের ইচ্ছা আমি বিয়েটা এখনই করে ফেলি।তোমাকে কিন্তু সব দায়িত্ব পালন করতে হবে।শিশির বুঝতে পারলো অনেক দেরি করে ফেলেছে।আগেই তার propose করা উচিৎ ছিলো।কিন্তু কি আর করার।কি বলবে বুঝতে না পেরে suddenly বললো স্নেহা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।সেই স্কুল লাইফ থেকে।কিন্তু কখনো বলার সাহস হয় নি।আমি জানি তুমি কিছুদিন পরই অন্য কারোর হয়ে যাবে।তাই আমার ভালোবাসার কথাটা বলেই দিলাম।এখন অনেক হালকা লাগছে।স্নেহা বললো এতোদিন বলো নি কেন।তারপর বললো আমি বুঝতে পারছি না এখন আমার কি বলা উচিৎ। পরে কথা হবে।কিছুদিন আর কথা হয় নি।সেদিন স্নেহা suddenly ফোন দিয়ে বললো তোমার সাথে অনেক কথা আছে।আজ বিকালে দেখা করবা।বিকালে যখন দেখা হলো স্নেহা বললো আমি ও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি অনেকদিন থেকেই।কিন্তু আমার বিয়ে আগে থেকেই ঠিক।কি করার বলো।কিছুই করার নেই।শিশির বললো আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলবো।আরে পাগল,তোমার তো পড়া শেষ হতে,চাকরি পেতে অনেক সময় লেগে যাবে।ততদিন কি আমার অপেক্ষা করা সম্ভব বলো।আমার ইচ্ছা থাকলে ও বাসা থেকে মেনে নেবে না।তারপর ও শিশির জোর করে স্নেহার বাবার সাথে কথা বললো।কিন্তু কোন লাভ হলো না।তার কিছুদিন পর শিশির আর স্নেহা বাবা-মায়ের অমতেই বিয়ে করে।শিশিরের বাসা থেকে ও মেনে নেয় না।শিশির একটা টিউশনি করা শুরু করে।স্নেহা ও একটা টিউশনি করে।এভাবে সংসার কোন রকম চলে যেত।দিন শেষে স্নেহার হাতটা একবার ধরলেই শিশিরের সব কষ্ট মিলিয়ে যেত।আস্তে আস্তে দুইজনের স্টাডি শেষ হয়ে যায়।শিশির একটা কলেজের লেকচারার হওয়ার চেষ্টা করে।আর সফল ও হয়।ছোট সংসারে শিশির আর স্নেহা দুইজন।প্রতিদিন শিশির স্নেহার জন্য আইসক্রিম কিনে আনত।স্নেহা খুব খুশি হতো।শিশির আইসক্রিম টা স্নেহা কে নিজ হাতে খাওয়াই দিত।সময় চলে যেতে লাগলো।বেশ সুখেই ছিলো।একটা সময় স্নেহা মা হতে চলে।আর ফুটফুটে একটা মেয়ে ও হয়।মেয়েটাকে দুজনই খুব ভালোবাসতো।মেয়েটা হওয়ার পর বাসা থেকেও ওদের মেনে নেয়।একদিন স্নেহা রাস্তা পার হতে গিয়ে accident করে। হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু কোন লাভ হয় না।শিশির খুব ভেঙে পড়ে।ভাবে,জীবনটাই বুঝি শেষ।কিন্তু একটা মেয়ে আছে।মেয়েটাকে শিশির কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দেয় না।ওই মেয়েটার মা আর ওই বাবা।মেয়েটা যখন যা আবদার করেছে শিশির সেই আবদার পূরণ করেছে।মেয়েটাকে কখনো এক ফোটা ও কাদতে দেয় নি।মেয়েটার জ্বর হলে সারারাত জেগে থেকেছে।মেয়েটার মন একটু খারাপ দেখলেই আড়ালে কেদেছে।হঠাৎ অনন্যা বললো হ্যা,আমিই সেই মেয়ে।মেয়েটার নাম অনন্যা।আর শিশির আমার বাবার নাম।তোমাকে যে প্রশ্নটা করতে চেয়েছিলাম করি।যেই বাবা তার মেয়েটা কে এতো ভালোবেসেছে মেয়েটার কি উচিৎ হবে বাবাটাকে কষ্ট দেওয়া।তাই তুমি এতো অপেক্ষা করে ও কোন লাভ হয় নি তোমার।আমি দুঃখিত।পারলে ক্ষমা করে দিও।তারপর অনন্যা বললো বাবা যদি তোমার সাথে বিয়ে দেয় তাহলে অবশ্যই তোমাকে বিয়ে করবো।আসলে এই সত্যিকার এর ভালোবাসার গল্পটা শোনার পর আমি ও বুঝলাম মেয়েটা নিষ্ঠুর না।ভালোবাসার মর্মটা আমার থেকে ভালো ওই বোঝে।জানি না অনন্যার বাবা আমাকে পছন্দ করবে কিন না।কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো।

*




4 Comments 639 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024