ক্লাস সেভেনে থাকতে রাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলো ছেলেটা,
হাতে ছিলো শুধু একটা গিটার, বড়লোক বাবার একমাত্র ছেলে হয়েও ঘর ছেড়ে আজিজ বোর্ডিং এ দিনের পর দিন পরে থেকেছিলো কেবল একটা নেশার জন্য...
সেই নেশার নাম ছিলো, 'মিউজিক'
ইট পাথরের নগরে ঝাকড়া চুল নিয়ে বাউল বেশে ঘুরে বেড়ানো ছেলেটার নাম হয়ে গেলো, 'নগর বাউল'
অসম্ভব কিছু সুরের মুর্ছনায় পাগল করে ফেললো,, কিছু বোহেমিয়ান তরুন যুবক কে। তার দেখাদেখি নীল জিন্সের সাথে পান্জাবী আর ঝাকড়া চুল তখন তরুনদের মধ্যে সবচেয়ে ক্রেজ ফ্যাশন ছিলো।
কনসার্টের কোন স্টেজে যখন তার ঝংকিত গলা গেয়ে উঠতো, 'মনে রেখো কেবল একজন ছিলো যে ভালোবাসতো শুধুই তোমাদের' তখন বুদ হয়ে যেত সকল শ্রোতা...
কি আশ্চর্য সব গান, 'হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা, হতেও পারে এই গানই শেষ গান, কিংবা 'কবিতা তুমি স্বপ্নচারিনী হয়ে খবর নিও না, 'পাগলা হাওয়া' সবগুলো ছিলো ছিলো ঐশ্বরিক কোন সুরের মুর্ছনা।
মতিন রহমানের নারীর মন ছবিতে শুধুমাত্র তার গাওয়া গান 'মীরাবাঈ' শোনার জন্য সে সময় সিনেমা হলে ভিড় জমিয়েছিলো হাজারো যুবক।
প্রথম শিল্পী হিসেবে বলিউডের মুভিতে প্লেব্যাক করেছিলো পাগলাটে ছেলেটা।মহেশ ভাটের গ্যাংস্টার মুভিতে তার গাওয়া 'ভিগি ভিগি' গানটি পুরো ইন্ডিয়াকে অবাক করে দিয়েছিলো।
মহেশ ভাট এক সাক্ষাতকারে বলেই ফেলেছিলো,, ’আমি আমার জীবনে এত অদ্ভুত আর আশ্চর্য কন্ঠ শুনি নাই হি ইজ রিয়েলি এমাজিং,,
রকস্টার মুভির মিউজিক ডিরেকশন দেবার সময় এআর রহমান বলেছিলো, 'পুরো ইন্ডিয়াতে জেমসের মত কোন রকস্টার নাই'
জ্বি আমি এতক্ষন মাহফুজ ফারুক আনাম জেমসের কথা বলছিলাম, আমাদের জেমস, আমাদের নগর বাউল..
যার বাংলাদেশ গানটা শুনলে শরীর প্রতিটা লোমকূপে শিহরণ জাগে। যার 'মা গানটা শুনে চোখে পানি আসে নাই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।
যে খ্যাতির নেশায় না ছুটে জীবনকে নিয়েছিলো গানের নেশায়, আজ খ্যাতি তার পিছনে ছুটে চলে।
আজ তার জন্মদিন, শুভ জন্মদিন জেমস।শুভ জন্মদিন নগর বাউল।
আশা করি কোনদিনই যেন আপনার গানের সাথে আমাদের শেষ দেখা না হয়। বেঁচে থাকো ইট পাথরের এ নগরের কোন ভালোবাসার বাউল হয়ে...
© ডাইরির পাতা ❤