অগ্নিকান্ডের আগে করণীয়..• জরুরি বহির্গমনের পথ নির্দিষ্ট করে চিহ্ন দিয়ে বা বাতি জ¦ালিয়ে ভবনে একাধিক দরজা ও সিঁড়ি রাখব
• আগুন প্রতিরোধক উপকরণ দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করব এবং ঘরের সৌন্দর্য্য বাড়াতে সহজেই আগুন ধরে যায় এমন উপকরণ (যেমন: কাঠ, হার্ডবোর্ড/পারটেক্স ইত্যাদি) ব্যবহার করব না
• সহজেই আগুন লাগতে পারে এমন বিপজ্জনক দাহ্যবস্তু বা পদার্থ বাড়িতে মজুত করা থেকে বিরত থাকব এবং অন্যদের সচেতন করবো
• বাড়ির বৈদ্যুতিক ও গ্যাস সংযোগে নিরাপদ স্ফুলিঙ্গ নিরোধক স্যুইচ ও প্লাগ ব্যবহার করবো
• বৈদ্যুতিক ফিটিংস প্রতি মাসে অন্তত একবার পরীক্ষা করব। প্রয়োজনে পুরোনো ফিটিংস পরিবর্তন করবো
• জলন্ত সিগারেট এবং মশার কয়েল থেকে সাবধান থাকব
• কুপি, মোমবাতি, খোলাবাতি ইত্যাদি ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করবো
• ছোট ছেলেমেয়েদের আগুন বিশেষ করে আতশবাজি, তারাবাতি ইত্যাদি নিয়ে খেলা করতে নিষেধ করবো
• রান্নার পর চুলা নিভিয়ে ফেলব এবং চুলার উপর ভেজা লাকড়ি বা কাপড় শুকাতে দেয়া থেকে বিরত থাকব
• ইস্ত্রি এবং ওয়াটার হিটারে বৈদ্যুতিক সংযোগ লাগিয়ে রেখে কখনও সেখান থেকে সরে যাব না
• বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিতে আর্থিং সংযোগের ব্যবস্থা রাখব
• মাল্টিপ্লাগ ও মোবাইল চার্জার ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করবো
• পরিবারের সবাইকে জানিয়ে বাড়ির একটি নির্দিষ্ট স্থানে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র রাখব। নির্দিষ্ট সময় পর পর অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রের কার্যকারিতা যাচাই করব এবং পরিবারের সবাইকে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার শিখিয়ে দেবো
• হাতের কাছে সবসময় দু-বালতি পানি বা বালু রাখব
• নিকটবর্তী পানির উৎস চিনে রাখব এবং ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল/ক্লিনিকের জরুরি টেলিফোন নম্বর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে রাখব
• স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের যোগাযোগের নম্বার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের কাছে রাখব।
• পরিবারে যদি শিশু, গর্ভবতী নারী, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ ব্যক্তি থাকে তবে জরুরি পরিস্থিতিতে তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য পরিবারের সবাই মিলে আগাম পরিকল্পনা করবো
অগ্নিকান্ড চলাকালে করণীয়..• আগুন লাগলে ঘাবড়াবো না। মাথা ঠান্ডা রেখে করণীয় ঠিক করবো। আগুনের বিস্তার রোধ করবো। আশেপাশের দাহ্য বস্তু সরিয়ে নিব।
• আগুন লাগলে সাথে সাথে বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করবো ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করবো
• আগুন লাগলে প্রাথমিক অবস্থাতেই ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দিব এবং ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার পূর্ব পর্যন্ত আগুন নেভানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখব
• কম্বল, কাঁথা, ছালা বা মোটা কাপড় ভিজিয়ে চাপা দিয়ে তেল জাতীয় আগুন নেভানোর চেষ্টা করবো
• বৈদ্যুতিক আগুনে বাড়ির প্রধান বৈদ্যুতিক স্যুইচ দ্রæত বন্ধ করবো
• আগুন ছড়িয়ে পড়লে এবং সহজে নেভানো না গেলে দ্রæত ভবন ত্যাগ করবো
• আগুন যেহেতু উর্দ্ধমুখী হয় তাই প্রথমে যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে সেই ফ্লোর এবং উপরের ফেøারের লোকদের আগে নামতে ও নামাতে সহায়তা করব। নিচে নামার ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খলভাবে দ্রæত নেমে আসব।
• ভবন ধোঁয়ায় ভরে গেলে বের হবার সময় নাকে-মুখে একটা কাপড় চেপে ধরব (ভেজা হলে ভালো হয়) এবং যতটা সম্ভব নিচু হয়ে বা হামাগুড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসব
• পরনের কাপড়ে আগুন লাগলে না দৌড়িয়ে মাটিতে গড়াগড়ি দেব। পুড়ে গেলে আক্রান্ত স্থানে ধীরে ধীরে গড়িয়ে পানি ঢালব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেব ও পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
অগ্নিকান্ডের পরে করণীয়..• জরুরি সেবাবিভাগসমূহের (যেমন: ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় থানা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, হাসপাতাল ও সিটি কর্পোরেশন/জেলা/উপজেলা/ ইউনিয়ন/পৌরসভা/প্রশাসন) সাথে দ্রæত যোগাযোগ করব
• ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাব
• পরিবারের নিখোঁজ ও আটকেপড়া সদস্যদের অনুসন্ধান এবং উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারীদলকে তথ্য জানিয়ে সহায়তা করব
• পরিবারের আহত সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করব এবং প্রয়োজনে তাকে দ্রæত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করব
• পরিবারে যদি নারী বিশেষ করে গর্ভবতী নারী/মা, শিশু, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ ব্যক্তি থাকে তবে তাদের বিশেষ চাহিদাগুলো পূরণের ব্যবস্থা নেব
• আশ্রয়কেন্দ্রে/নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেওয়া পরিবারের সদস্যদের জন্য সামাজিক অথবা সরকারি- বেসরকারি সংস্থাসমূহের সহায়তায় খাদ্য, চিকিৎসা, পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো
• পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সঠিক তথ্য জানাব
• মানবিক ও পুনর্বাসন সহায়তা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করবো
• অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নারী ও শিশুদের প্রতি সকল প্রকার হয়রানি, সহিংসতা, নির্যাতন, অপহরণ এবং পাচার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ রাখব