আমাদের চারপাশে অনেক রকমের ব্যাকটেরিয়া। এগুলোর সংক্রমণে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধে। সারাতে খেতে হয় অ্যান্টিবায়োটিক। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা অনেকটাই নির্ভর করে এর ব্যবহারবিধির ওপর। এ ব্যাপারে তাই সচেতনতা জরুরি। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার আগে চিকিৎসককে শরীর সম্পর্কে সব তথ্য জানানো জরুরি। চিকিৎসক হয়তো নিজে থেকেই অনেক কিছু জিজ্ঞেস করবেন। তারপরও রোগীর সচেতনতা দরকার। কয়েকটি বিষয় জেনে নিন।
১. যেকোনো জ্বরের জন্যই অ্যান্টিবায়োটিক নয়। কখনোই চিকিৎসককে অ্যান্টিবায়োটিক লেখার জন্য জোর করবেন না বা অনুরোধ করবেন না। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মা-বাবারা প্রায়ই এমনটা করেন। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে জ্বর হয়েছে—এমন প্রমাণ হাতে পাওয়ার আগে অ্যান্টিবায়োটিক নয়।
২. নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকে অনেকের সংবেদনশীলতা থাকে। একই অ্যান্টিবায়োটিক একজনের জন্য প্রাণ রক্ষাকারী; আরেকজনের জন্য প্রাণসংহারীও হতে পারে। কোনো ওষুধে অ্যালার্জি থাকলে তা অবশ্যই চিকিৎসককে জানাতে হবে। ওষুধ সেবন শুরু করার পর ত্বকে র্যাশ, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। প্রয়োজনে ওষুধ বন্ধও করে দিতে পারেন।
৩. অনেক অ্যান্টিবায়োটিক অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় খাওয়া নিষেধ। এতে বিপদ হতে পারে। তাই চিকিৎসককে নিজের শারীরিক অবস্থা জানানো জরুরি।
৪. অনেক ওষুধের সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রিয়া হতে পারে। যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই চিকিৎসককে বিষয়টি জানাতে হবে।
৫. ওষুধ কত ঘণ্টা পরপর মোট কত দিন খেতে হবে, তা ভালোমতো জেনে নিন। ঠিক সেই সময় ধরেই ওষুধ খেতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে সাধারণত দিনে তিনবার বা চারবারের বদলে আট বা ছয় ঘণ্টা পরপর ওষুধ খেতে বলা হয়। কোনো একটা ডোজ খেতে ভুলে গেলে পরবর্তী ডোজ কিন্তু বেশি খাওয়া যাবে না।
৬. অ্যান্টিবায়োটিকের পুরো কোর্স শেষ হওয়ার আগেই শরীর ভালো লাগতে পারে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়ে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। পুরো কোর্সটি শেষ করতে হবে। না হলে জীবাণু পুরোপুরি ধ্বংস নাও হতে পারে।
৭. অন্য কেউ কোনো অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে গলাব্যথা সারিয়েছেন—এমন তথ্যের ভিত্তিতে কখনো অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। আবার আগে যে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে কাশি সেরেছে, সেটি আবার খেলে সেরে যাবে, এমন ধারণা ভুল। আগেরবারের রয়ে যাওয়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াও ভালো কথা নয়।
৮. শিশুদের ওজন অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক মাত্রা নির্ধারণ করা উচিত। একই বয়সী আলাদা ওজনের দুই শিশুর অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স দুই রকম হতে পারে। না বুঝে-শুনে বা ধারণা করে তাই শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন না। মাত্রা ভালো করে জেনে নিন। পুরোনো মুখ খোলা অ্যান্টিবায়োটিক সিরাপ বা সাসপেনশন আবার ব্যবহার করবেন না। সাসপেনশন তৈরির সঠিক নিয়ম জেনে নিন।
৯. চিকিৎসকের কাছে অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জেনে নিতে হবে। কোনো অ্যান্টিবায়োটিকে প্রস্রাবের রং লাল হয়ে যায়, কোনোটাতে আবার পেটে গ্যাস হয়। কোনটা খেলে রুচি কমতে পারে বা বমি পেতে পারে। জানা থাকলে ভালো।
১০. কোনো কোনো অ্যান্টিবায়োটিক খেলে বেশি করে পানি পান করতে হয়। কোনো কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে কিছু খাবার বা অ্যালকোহল বিক্রিয়া করে। কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে, যা কিডনি বা যকৃতের সমস্যায় সেবন করা যায় না। তাই নিজের শরীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দিয়ে চিকিৎসককে সাহায্য করতে হবে।
Posted By: midus(Premium User!)
Post ID: 3540 Category: Tips and Tricks
Posted on: 2 months 3 days ago
Authorized by: Viviana