FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

নজর থাকবে ওদের উপর,,,,

নজর থাকবে ওদের উপর,,,,

"নজর থাকবে ওদের উপর"
পর্ব ০১
Asia Cup 2k18 UAE

সংযুক্ত আরব আমিরাত এখন রূপ নিয়েছে উৎসবের দেশে। সুদীর্ঘ ২৩ বছর বাদে যে মরুর বুকে আবারও বসতে যাচ্ছে এশিয়া কাপের আসর! অন্যদিকে এশিয়ার ক্রিকেট প্রেমীদের সময় এখন যেন আর ফুরুচ্ছেইনা! যারা ক্রিকেটকে বুকে ধারন করে আর অন্তরে লালন করে, তাদের কাছে ঘড়ির কাটা এখন আস্তে চলছে, এমন মনে হবারই কথা।

এশিয়ার ক্রিকেটকে এক সুতোয় বাঁধতে, আগামী দুই বছররের জন্য এশিয়ার শ্রেষ্ঠ দল কে, তা বলে দিতে দরজায় কড়া নাড়ছে এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই, এশিয়া কাপের এবারের ১৪ তম আসর। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এবারের এশিয়া কাপে, এশিয়ার সেরা দল হবার জন্য লড়াই করবে মোট ছয়টি দল। এরই মধ্যে এশিয়া কাপে অংশ নিতে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দল এখন আমিরাতে।

তবে আমিরাতের প্রচন্ড গরমকে মানিয়ে নেয়া, আর সেই সাথে ব্যাটে বলে যে দলটি নিজেদের সেরা পারফর্মেন্স পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে করতে পারবে, তাদের মাথায়ই ওঠবে এশিয়ার সেরা হবার মুকুট আর হাতে জুটবে সোনালী সেই ট্রফি। তবে এর জন্য প্রত্যেক দলকেই জ্বলে ওঠতে হবে একটি পুরো দল হিসেবে। কেননা, এমন বহুজাতিক টুর্নামেন্টে কোন দলকে শিরোপা জেতানো কারো একার পক্ষে কখনই সম্ভব নয়। প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই কেবল সম্ভব ট্রফির গায়ে কোমল হাতের স্পর্শ লাগানো, সম্ভব এর বুকে আবেগী চুমু খাওয়া। তবে প্রত্যেক দলেরই কয়েকজন করে নিউক্লিয়াস রয়েছেন। যাদের পারফর্মেন্সের উপর নির্ভর করে পুরো দলের সাফল্য। যারা ভালো খেললে পুরো দল উজ্জীবিত হয়, পুরো দলের মোমেন্টামের পরিবর্তন হয়। এবারের এশিয়া কাপেও তারা নিজের দলের সাফল্যের কান্ডারী হতে পারেন, আবার হতে পারেন বিপক্ষ দলের জন্য দুশ্চিন্তার কারনও। চলুন এক পলক দেখি আসি এবারের এশিয়া কাপে নিজ নিজ দলের হয়ে কারা ব্যট হাতে হতে পারেন তুরুপের তাস।

শ্রীলংকা ঃ-

কুশাল পেরেরাঃ উইকেট কিপার ওপেনিং ব্যাটসম্যান। গড় প্রায় ৩০। বর্তমান সময়ে লঙ্কানদের মধ্যে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। দলের প্রয়োজনে কখনও কচ্ছপ গতি আবার কখনও খরগোশের গতিতে ব্যাট চালাতে পারেন তিনি। ওপেনার হিসেবে দলের ভালো স্টার্ট এনে দেওয়ার দায়িত্বটা তার কাঁধেই থাকবে। আর তিনি যে তার রুলটা ভালোই পালন করতে জানেন, এটা তিনি অতীতে দেখিয়েও এসেছেন। লঙ্কানদের হয়ে ৭৮ ওডিআইতে ৩ সেঞ্চুরির পাশাপাশি কুশালের রয়েছে ১১টি ফিফটি। এছাড়াও দলের আরেক নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান চান্দিমাল না থাকায় শ্রীলংকার ইনিংস বিল্ড আপ করার গুরু দায়িত্ব থাকবে তার উপরই। তাই নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কানদের নজর থাকবে কুশাল পেরেরার উপর।

পাকিস্তান ঃ-

ফকর জামানঃ একেবারেই নতুন একজন ক্রিকেটার। ওয়ানডে ক্রিকেটে একজন পিওর ব্যাটসম্যানের যে গুণাবলি গুলো থাকা প্রয়োজন তার সবকিছুই আছে ফকর জামানের ভেতর। ওয়ানডেতে তার গড় ৭৬ এর উপরে আর স্ট্রাইকরেট, এটাও ১০০'র উপর। পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মোটে ১৮টি। কিন্তু এর মধ্যেই নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। দলে নিজের জায়গাটাকে করেছেন একেবারেই পাকাপোক্ত। নিজের ১৮ ম্যাচের ছোট ওয়ানডে ক্রিকেটের ক্যারিয়ারে একটি ডাবল সেঞ্চুরিসহ তিন সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ছয় অর্ধশতক। ১৮ ম্যচে দু'অঙ্ক ছোঁতে পারেননি কেবল মাত্র একটি ম্যাচে। তার সবচেয়ে বড় গুণ বলের সাথে পাল্লা দিয়ে সমান তালে রান তুলতে পারা। যে কারনে পাকিরা তাকে নিয়ে বাজি ধরতেই পারে।

ভারত ঃ-

রোহিত শর্মাঃ ওয়ানডে ক্রিকেটে বর্তমান সমময়ের সেরা ওপেনারদের একজন, ভারতের রোহিত শর্মা। তার ব্যাটিং স্কিল দেখলে তার দিক থেকে চোখ সরানো দায়। নিজের দিনে তিনি যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন, তা তিনি নিকট অতীতে বার বার দেখিয়ে এসেছেন। একাই ইনিংসকে নিয়ে যেতে পারেন পাহাড় সমান উচ্চতায়। ভারতের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে অভিজ্ঞদের একজন তিনি। ১৮৩ ম্যাচে ১৮ সেঞ্চুুরি আর ৩৪ ফিফটির সমন্বয়ে রয়েছে, সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি রান। আর ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ডাবল হান্ড্রেডের রেকর্ডটাও এই রোহিতেরই। তার ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান দেখেই বোঝা যায় কতটা ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান তিনি। ওর বিপক্ষ দলের বোলারদের মূল লক্ষ্যই থাকবে রোহিত সেট হওয়ার আগেই তাকে সাজঘড়ে ফেরানো।

আফগানিস্তান ঃ-

মোহাম্মদ শেহজাদঃ তিনি যে একজন ক্রিকেটার, এটা অন্তত তার শারীরিক গঠন দেখে বোঝার অন্ত নেই। তবে ক্রিকেট মাঠে তার ব্যাটিং দেখে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য। ইনিংসের শুরু থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হয়ে কতজনইবা খেলতে পারেন? দ্রুত রান তোলতে পারার এবিলিটিই তার সবথেকে বড় গুণ। তবে এর জন্য যে তিনি তার গায়ের জোর ব্যবহার করেন তা কিন্তু নয়। ক্লাসিক ক্রিকেটীয় শর্টস খেলেই রান তুলতে পারেন তিনি। তিনি যেদিন সেট হবেন বিপক্ষ দলের বোলারদের জন্য সেদিন অপেক্ষা করবে বিষণ্ণ কিছু মুহূর্তের। আফগানদের হয়ে ৭১ ম্যাচে ১২ ফিফটির পাশাপাশি ৪টি সেঞ্চুরি রয়েছে শেহজাদের। এবারের এশিয়া কাপে সমগ্র আফগান ক্রিকেটপ্রেমীরা চেয়ে থাকবে তার হাতের উইলোটার উপর।

হংকং ঃ-

বাবর হায়াতঃ এবারই প্রথম এশিয়া কাপে খেলছে হংকং। তাই হংকং ক্রিকেটের কাছে তাদের ভক্ত সমর্থকদের চাওয়া খুব একটা বেশি হবার কথা নয়। তাছাড়া এশিয়া কাপের ছয় দলের মধ্যে কেবল হংকং এরই আইসিসির ওয়ানডে স্ট্যাটাস নেই। তবে এর পরও এবার ভালোই চমক দেখাতে পারে হংকংয়ীরা। যার একটা উংস হতে পারেন বাবর হায়াত। হংকং এর হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান বাবর হায়াতের। ২০ ম্যাচে প্রায় ৪৩ গড় ও আট ফিফটিতে ৭৯৫ রান রয়েছে বাবরের। হংকং এশিয়া কাপে ভালো খেললে তার পেছনে অবদান থাকতে পারে বাবর হায়াতের।

বাংলাদেশ ঃ-

তামিম ইকবালঃ বাংলাদেশতো বটেই, বর্তমান সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ওপেনারদের ছোট তালিকায়ও থাকবে তামিম ইকবালের নাম। একসময় মারমার কাটকাট স্টাইল আর অধৈর্যশীল ব্যাটিং করলেও যতই সময় গড়িয়েছে তামিম ততই নিজেকে করেছেন আরও পরিনত, করেছেন আরও ধযৈশীল। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে তামিম নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন অন্য একক উচ্চতায়। বনেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে। তামিমের ব্যাট হেসেছে কিন্তু বাংলাদেশ হাসেনি, এমনটা খুব কমই হয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান, ফিফটি কিংবা সেঞ্চুরি, সবকিছুতেই সেরা তামিম ইকবাল। শুধু রান সেঞ্চুরি নয়, অভিজ্ঞতা আর ম্যাচিউরিটিতেও সবচেয়ে এগিয়ে তামিম। বিগত এশিয়া কাপ গুলোতেও ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। এছাড়াও বর্তমান সময়ে তামিম রয়েছেন ফর্মের তুঙ্গে। যে করনে, এবারের এশিয়া কাপেও দল টিম ম্যানেজমেন্ট কিংবা ভক্ত, সবাই চেয়ে থাকবে তামিরের ব্যাটের দিকে, স্বপ্ন বুনবে তামিম তথা বাংলাদেশের ভালো একটি শুরুর।

এবারের এশিয়া কাপে আপনি যদি ব্যাটসম্যানদের শৈল্পিক ব্যাটিং, কিংবা ক্রিকেটের সত্যিকারের ব্যাটিং সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চান, আথবা ব্যাটিং দেখে মনে প্রশান্তি আনতে চান, তাহলে নজর রাখুন এ ব্যাটসম্যানদের উপর।

কালেক্টেড

*




0 Comments 663 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024