FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

সাদা মেঘের ভেলা

সাদা মেঘের ভেলা

*


.
.
__ কী রে? বললি নাতো মেয়ে কেমন লাগলো?
__ মেয়েটা সুন্দর! যতটা হওয়ার দরকার তার থেকে বেশি সুন্দর। তবে.........
__ তবে মানে? এটা তোদের কালচারের একটা বিগ প্রবলেম বুঝলি, সব কিছুই মধ্যেই কিন্তু খুজে বেড়ানো। কী হয়েছে খুলে বল? কোনো কিন্তু পেটের মধ্যে রাখিস না।
__ না মানে আসলে, সবাই বলাবলি করছিলো যে, মেয়েটার নাকি এই গ্রামেরই একটা ছেলের সাথে ভাব আছে। তার ওপর মেয়েটার উপর নাকি জ্বীন না পরী কিসের জানি নজর আছে আগে থেকে।
__ দেখ রফিক! শহরে থেকে এতো লেখাপড়া করে, এতোদিনে এই শিখলি? ছিঃ! জ্বীন পরীর নজর!
__ না ছোটোমামা! তবে বলাবলি করছিলো তো সবাই।
__ দেখ বাবা! প্রতিটা মেয়েরই বিয়ের আগে দুই -একটা বানোয়াট গল্প থাকে, আর মেয়েটা সুন্দরী হলে তো কথাই নেই। হয়তো পাড়া-পড়শী দেখেছে, রাস্তায় দাড়িয়ে কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে, ওটাই ইনিয়ে বিনিয়ে ভাব-ভালবাসায় নিয়ে গেছে। আর এরকম মেয়ে তুই খুজে পাবি? দেখ রফিক, সুন্দরী মেয়েদের যেকোনো দোষী ক্ষমার যোগ্য। এগুলো কোনো অপরাধের মধ্যে পড়েনা। আর আমরা তো আছি নাকি? সব বিষয় খুটিয়ে দেখবো! চল ভিতরে চল।
.
রফিকের ছোটোমামা জনাব খালেক রহমান বিয়ের কথাবার্তা দিনতারিখ সব ঠিক করে ফেললেন। আসার আগে পাকিস্তানি আমলের একজোড়া হাতের বালা দিয়ে মেয়েকে আশীর্বাদ করলেন। মেয়ে তার বড়ই পছন্দ হয়েছে।
সুন্দরী মেয়েরা সাধারণত খুব কঠিন মনের হয়। রূপ নিয়ে তাদের মনের মধ্যে একধরনের অহংকার থাকে। হাসতে হাসতে যেকোনো অতি জটিল কথা অতি সহজে যে কাউকে বলে ফেলে। এই মেয়ে ওরকম না, চেহারার মধ্যে নমনীয়তার একটা ছোঁয়া আছে।
তিনি দেখেছেন, সুন্দরী মেয়েদের গলার স্বর খুব কর্কশ হয়। রূপের সাথে পাল্লা দিয়ে গলার স্বরও ভারী হয়ে ওঠে। আজ মেয়েটিকে দেখার পর মনে হলো, কথাটি ভূল। প্রকৃতি ইচ্ছা করেই হঠাৎ কাউকে, সব সৌন্দর্য একত্রে দিয়ে পৃথিবীতে পাঠায়। কম জনেরই তাদের কাছে পাওয়ার ভাগ্য হয়।
.
.
গাড়িতে বসে রফিকের ছোটোমামা তার দীর্ঘ সাতাশ বছরের অতীতে ফিরে গেলেন। এক ঝড় বাদলার রাতে তিনি রাঈশা নামের এক রূপবতী তরুণীর হাত ধরে অজানা পৃথিবীতে পাড়ি দিয়েছিলেন! মনে হয়েছিল জগতে ভালোবাসার মতো সত্য আর কিছু নেই। অভাব, অনটন, দুঃখ, কষ্ট সবই ভালোবাসার কাছে তুচ্ছ। তাকে অবাক করে দিয়ে সতেরো দিনের মাথায় রাঈশা বাবার বাড়ি ফিরে যায়। রাঈশার বাবার মিথ্যা অপহরণ মামলার দায়ে তিনি তিনবছর জেলও খাটেন। রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে পরবর্তী সময়ে তিনি আর বিয়ে করেননি। আজ তার বাড়ি, গাড়ি, টাকাপয়সা সব আছে কিন্তু মাঝরাতে ভালবাসি কথাটা বলার মতো কেউ নেই। তিনি চাইলেই অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে শরীরের এক কদর্য অংশ কিনে নিতে পারতেন। তা তিনি করেননি, এক চিলতে কৃত্রিম আনন্দ ভোগ করার বাসনা তার মধ্যে কোনোদিনই হয়নি।
খালেক রহমান দীর্ঘশ্বাস ফেলে পাশে বসে থাকা রফিকের হাত ধরলেন, আশ্বাস দেওয়ার আশায়। আচ্ছা, এই রফিক ছেলেটিকে যে তিনি গভীর মমতায় ঘিরে রেখেছেন! রফিক কী তা জানে? .............. (চলবে)
.
.
written by : A.R Raj (আবেগপ্রবণ)

*




0 Comments 498 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024