FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

Best Friend

Best Friend

*



Writer: maxwel_srz(Shahrukh Ahmed)

আমার আজ মনটা অনেক ভালো। মেডিকেলে চান্স পেয়েছি।।আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিলো মেডিকেলে পড়ার।
আমার সব থেকে কাছের বন্ধু অনন্যার ও ইচ্ছা ছিলো আমি মেডিকেলে পড়বো।কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণের কথা আমার সব থেকে কাছের বন্ধু অনন্যাই জানে না।




এই জন্য কাল সকালে আমি অনন্যার বাসায় যাবো।অনন্যার বাসা খুলনাতে।আর আমার
ঢাকায় ।কিন্তু একটা সময় অনন্যা ও ঢাকাতে থাকতো।
অনন্যার বাবা ঢাকাতে জব করতো।একটা সময় অনন্যা ও ঢাকায় চলে আসে আর সেখান থেকেই আমার সাথে বন্ধুত্ব।তারপর কি হলো?একটু পরেই জানতে পারবেন।
আমার পাশে ট্রেনে একটা মেয়ে বসেছে।আমি অনেক excited...অনন্যা শুনলে


কতো খুশি হবে।ওর হাসিমুখ দেখতে আমার খুব ভালোলাগে।
এসব ভাবছি এমন সময় আমার পাশে বসা মেয়েটা জিজ্ঞাসা করলো আপনি কোথায় যাচ্ছেন?আমি হাসিমুখেই বললাম খুলনাতে।



মেয়েটা বললো আপনার বাসা কি খুলনাতে?না।বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।
মেডিকেলে চান্স পেয়েছি।আমার বন্ধু শুনলে খুব খুশি হবে।বন্ধুটা কি ছেলে? না।মেয়ে।


শুধুই বন্ধু নাকি ভালোবাসেন?এটা জানতে চাইলে শুরু থেকে সব বলতে হবে।আপনার কি ধৈর্য আছে?জ্বি।অবশ্যই।
তাহলে শুরু করেন।আমি এবার শুরু করলাম।আমার বাসা ঢাকায়।ছোটবেলা থেকেই আমার অনেক বন্ধু।খুব সহজেই কারো সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায়।কিন্তু কখনো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড খুজে পায় নি।



যখন আমি ক্লাস সিক্স এ পড়ি তখন আমাদের পাশের বাসায় অনন্যা নামে একটা মেয়ে কে দেখতে পাই।ওর আব্বু অনেক আগে থেকেই ঢাকা তে জব করে।কিন্তু ও নাকি ঢাকাতে আসতে চাইতো না।



একটা সময় ওর ও ইচ্ছা হয় ঢাকাতে আসার।তারপর ও ঢাকায় চলে আসে।কিছুদিন পর ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়।
ক্লাস সেভেন এ আমরা হয়ে যায় বেস্ট ফ্রেন্ড ..প্রতিদিন একসাথে স্কুলে যেতাম।আমি চশমা পরতাম।দূরের জিনিস ঝাপসা দেখতাম।ও বলতো আমি চশমা পরলে নাকি আমাকে ডাক্তার দের মতো লাগে।ওর ইচ্ছা ছিলো আমি যেন ডাক্তার হই।বেস্ট ফ্রেন্ড এর ইচ্ছার মূল্য সবার কাছে থাকে।আমার কাছে ও ছিলো।
মাঝে মাঝে ও আমাকে রান্না করে খাওয়াতো।ও ছিলো খুবই ভালো।ওর সাথে আমি আমার সব কথা share করতে পারতাম।একটা মানুষ এতো ভালো হয় কি করে?





ও আইসক্রিম খেতে খুব পছন্দ করতো।আমি মাঝে মাঝেই ওর জন্য আইস ক্রিম নিয়ে আসতাম।ওকে হাতে করে খাওয়াই দিতাম।এভাবেই চলতে লাগলো।



পাশে বসা মেয়েটা বললো স্কুল লাইফে তো আপনি অনেক লাকি ছিলেন।সবার ভাগ্যে কিন্তু এইরকম বন্ধু জোটে না।
তারপর কি হলো?দেখতে দেখতে ৩ টা বছর কেটে গেলো। ক্লাস টেন এ আমি একটু চেঞ্জ হয়ে যায়।অনন্যা ও কিছুটা চেঞ্জ হয়ে যায়।



ও আগের থেকে আমাকে অনেক বেশি কেয়ার করে।আমার জন্য আগের থেকে বেশি রান্না করে।মাঝেই মাঝেই বলে তোর জন্য রান্না করেছি।



আমার জ্বর হলে বারবার খোজ নেই।৩ বারই ফোন করে জিজ্ঞাসা করে আমি খেয়েছি কি না।এখন কেন জানি ওর জন্য আর আইসক্রিম নিয়ে আসা হয় না।



ইচ্ছা করে না।একটা মেয়েকে পছন্দ করতাম ক্লাস নাইন এ।মেয়েটার নাম রিহা।ওর কথায় বেশি ভাবতাম।এই জন্য অনন্যার সাথে আগের মতো আর কথা হতো না।কিন্তু অনন্যা আগের চেয়ে আরো বেশি খোজ নিতো।একটা সময় রিহার সাথে relation ও হয়।পাশে বসা মেয়েটা বলে উঠলো অনন্যা কে বলছেলেন আপনার আর রিহার সম্পর্কের কথা?




কিছুদিন পরে বলি।জানেন একদিন অনন্যা আমার জন্য রান্না করে ফোন করে ওদের বাসায় আসার জন্য।আমি রিহার সাথে অনেক্ষণ কথা বলবো বলে ওর বাসায় ওইদিন যায় নি।
অনেক ভুল করেছিলাম।ওইদিন অনন্যার সাথে প্রথম ঝগড়া হয়।ওর খোজ খবর নিই না বলে অনেক অভিযোগ ছিলো।



ওইদিনই বলি রিহার কথা।সম্পর্ক কেবল শুরু।এখন অনেক ব্যস্ত থাকি।তারপর থেকে অনন্যা আমার খোজ আগের চেয়ে কম নিতো।



এস এস সি শেষে একদিন আমি রিহার হাত ধরে হাটছিলাম।অনন্যা দেখে ফেলে।তারপর সাডেনলি বলে শিশির আমি তোকে অনেক ভালোবাসি।তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না।জানিস আমার খুব ইচ্ছা ছিলো সারাজীবন তোকে রান্না করে খাওয়াবো।তুই আইসক্রিম এনে আমাকে খাওয়াই দিবি।কিন্তু তোর জীবনে এই মেয়েটা আসলো।তুই আমাকে ছাড়া থাকতে পারবি??




ওইদিন কেন জানি খুব রাগ হয়েছিলো।আমি ওকে আমার best frnd ভাবতাম।আর ও আমার গার্ল ফ্রেন্ড এর সামনে এসব কথা বললো।খুব বকা দিয়েছিলাম।



আর বলেছিলাম আমার সাথে যেন কোনদিন কথা না বলে।পাশে বসা মেয়েটা বলে উঠলো আপনি কাজটা ঠিক করেন নি।মেয়েটা আপনাকে এতো ভালোবাসতো।আর আপনি তাকে ভালো না বাসলে ভালোভাবে বলতে পারতেন।তারপর কি হলো??




কলেজ লাইফে অনন্যা আবার খুলনায় চলে যায়।ওর সাথে আর কথা হয় নি।আমি তখন রিহার প্রেমে অন্ধ ছিলাম।একটা সময় জানতে পারি রিহার আরো একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে।
তারপর আমাদের ব্রেক আপ।হঠাৎ একদিন আমি অনন্যা কে মিস করা শুরু করি।বৃষ্টি হলে ওর রান্না খেতে মন চাই।আমি আমার ভুল বুঝতে পারি।




ভেবেছিলাম মেডিকেলে চান্স পেয়ে ওর সাথে দেখা করবো।আর ওকে সরি বলবো।মেয়েটা বললো ওকে কি আপনি ভালোবাসেন?আমি বললাম অনেক ভালোবাসি।
সারাজীবন ওর রান্নাই খাবো।প্রায় চলেই আসলাম।পাশে বসা মেয়েটা হঠাৎ বলে উঠলো তা আর সম্ভব না।
২ বছর আগে একটা road accident এ অনন্যা মারা যায়।আমি ওর কাজিন....শুরুতেই যদি বলতাম তাহলে আর গল্পটা জানা হতো না।তাই শুরুতেই বলি নি।




জানেন ও accident এর সময় আপনার নামই বলছিলো।hospital এ নিয়ে যেতে যেতেই ওর মৃত্যু হয়।
চোখ দুইটা জলে ভিজে গেলো।চোখের সামনে ভেসে আসছে সেই মুহূর্ত যেদিন অনন্যা বলেছিলো তুই আমাকে ছাড়া থাকতে পারবি?

*




8 Comments 702 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024