সফলতার সংজ্ঞা কী? এর সাথে মোটিভেশনের ই বা কী সম্পর্ক?
সফলতার সংজ্ঞা কী? এর সাথে মোটিভেশনের ই বা কী সম্পর্ক?
থিবীর সব থেকে বড় মোটিভেশন হল সেল্ফ মোটিভেশন।
মেয়েটির বয়ফ্রেন্ড নেশায় মত্ত… সারাদিন এ নিয়ে ঝগড়া হয়… কি করণীয় পরামর্শ চায়… কিন্তু দিন শেষে মেয়েটি নিজেই আবার বলে, “ভাইয়া আমি সবই বুঝি। কিন্তু এরপরেও ছাড়তে পারি না ওকে।”
সারাদিন বাহিরে আড্ডা দিয়ে ছেলেটি দিন পার করে। অথচ মনে অনেক আশা জীবনে ভাল পজিশনে যাওয়ার। আধাঘন্টা খানেক আলাপ হল… অনেক কিছু বুঝানোর পর সে এক সময় বলে উঠে “ভাইয়া, এগুলো সবই তো বুঝি, তবুও পড়াশুনা করতে ইচ্ছে করে না”।
মোটিভেশন – Motivation
আসলে আমাদের জীবনে মোটিভেশনের তেমন দরকার নেই… আমরা সবই বুঝি, জানি। মানুষের মোটিভেশনাল কথা, লেকচার শুনে আমরা মোটিভেট হই ঠিকই, কিন্তু তার স্থিতি খুব অল্প সময়ের জন্য থাকে… যখন শোনা হয়, তখন হয়তো উজ্জীবিত হই, চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে… কিন্তু খানিক পরেই আবার সেই আগের মত।
জীবনে সবচেয়ে যে জিনিসটা বেশি দরকার তা হল সেলফ মোটিভেশন (Self Motivation) ও আত্মনিয়ন্ত্রণ। নিজের মনের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কোন মোটিভেশনই আপনার জীবনে কাজে লাগবে না।
এক মোটা লোকের কাহিনী, যার ওজন ছিল নব্বই কেজি। ওজন কমানোর জন্য তিনি গেলেন ওজন কমানো বিষয়ক মোটিভেশনাল সেমিনারে। অনেক কিছু শুনলেন, পণ করলেন আর জাংক ও ফ্যাটি ফুড খাবেন না। বাসায় আসার পথে বার্গারের দোকান দেখে আর লোভ সামলাতে পারলেন না। গপগপ করে গিলে ফেললেন গোটা তিনেক বার্গার।
সবার আগে নিজের জীবনে সফলতার সংজ্ঞা ঠিক করে নিতে হবে। একেক জনের কাছে সফলতার সংজ্ঞা একেক রকম।
সুশান্ত পাল দাদার কাছে সফলতা হল বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকুরীতে ঢুকা… আবার আজকের বাংলাদেশ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীনের কাছে বিসিএস চাকুরী ছেড়ে মিডিয়াতে উপস্থাপনা করাকেই সফলতা মনে হয়েছে।
সোলাইমান সুখনের বক্তব্যগুলো শুনে মনে হয় আইবিএ থেকে এমবিএ করে ছয় ডিজিটের কর্পোরেট চাকুরী করাই হল সফলতা… আবার জাতীয় ভার্সিটি থেকে পাশ করে আমার বন্ধু যখন বহুকষ্টে বিশ হাজার টাকা বেতনের চাকুরী যোগাড় করে গর্ব করে, সেটাই তার কাছে সফলতা।পেশাগত জীবনে ডাক্তার বিশেষ করে সরকারি ডাক্তার হওয়াকে অনেকে জীবনে সফলতা বলে… আবার আব্দুন নূর তুষার ভাই সরকারি ডাক্তারির চাকুরী ছেড়ে টিভি অনুষ্ঠান নির্মান ও উপস্থাপনার পেশাকে সফলতা মনে করে তা বেছে নিয়েছেন। লোকে কি ভাবছে, তারা কি করছে, উনি এতো বড়লোক কেন, সে এতো সুন্দর কেন- এসবের পেছনেই আমরা এতো সময় নষ্ট করি যে নিজের ভেতর যে সুপ্ত প্রতিভা, শক্তি, সৌন্দর্য আছে, সেটা আর চোখে পরে না।
কে কি বলল, ভাবল, করল- সেদিকে না তাকিয়ে সবার আগে ঠিক করা উচিত আপনি আসলে কি চান… প্রত্যেক মানুষই ইউনিক… স্বতন্ত্র। একেক জনের চাওয়াও তাই একেক রকম। সবার চাওয়া যে এক রকম হতে হবে, তা নয়।
এরপর চাওয়া অনুযায়ী নিজের লক্ষ্য ও টার্গেট ফিক্সড আপ করা উচিত এবং সেদিকেই চলা উচিত… যা কিছু হোক না কেন, সব সময় নিজের লক্ষ্যের উপর স্থির থাকা উচিত।
জীবনে কোন বিষয়ে কিছু করার সিদ্ধান্ত নিলে সে সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত পিস্তল থেকে বের হওয়া বুলেটের মত। একবার সিদ্ধান্ত নিলে সেটাকেই বাস্তবে রুপ দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এর জন্য যদি কোন কিছু ত্যাগ করতে হয় কিংবা নিজের কষ্টও হয়, তবুও তা থেকে দূরে চলে আসা যাবে না।
জীবন আপনার, শরীর আপনার, মন আপনার… শুধু নিজের শরীরের উপর নয়, নিজের মনের উপরও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। নিজের মনকে নিয়ন্ত্রনে আনতে পারাও একটি বড় সফলতা।
Posted By: shakib
Post ID: 6357
Posted on: 6 years 10 minutes ago
Authorized by: ChatGirl