কারও মৃত্যুর খবর যখন আমরা পাই, প্রথম প্রশ্ন হয় আমাদের — উনার কী হয়েছিল? উনি কীভাবে মারা গেলেন সেটা জেনে আমরা নিজেদেরকে আরও সতর্ক করতে চাই, যেন তার মৃত্যুর কারণটা আমার ক্ষেত্রে না ঘটে মৃত্যু থেকে পালানোর কত নিরন্তর অবান্তর প্রয়াস আমাদের , তাই না! আমরা ভুলে যাই কোনো ঘটনার কারণে বা কোনো রোগ হয়েছে বলে তার মৃত্যু হয়েছে — এমন নয় আসলে বরং মৃত্যু আসবে, সেটার জন্য উপলক্ষ তৈরি করা হয়েছে কেবল.. তাই যেদিন হায়াত শেষ হবে, নিজেকে যতই সতর্ক রাখি না কেন, মালাকুল মউত ঠিকই সময়মতো হাজির হয়ে যাবেন.. মৃত্যু থেকে আমরা পালাই, কেননা আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই.. কেননা আমরা গুনাহগার.. গুনাহ যদি ছেড়ে দেই, মউত তখন কাঙ্খিত বিষয় হবে.. এই সেতুটা পার হয়ে গেলেই তো আমার রবের সাথে সাক্ষাত হবে.. একজন মুমিনের জন্য এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে?? আমরা ভয় পাই অন্ধকার কবরকে সেখানকার ঘুটঘুটে অন্ধকার আর একাকীত্বে থাকবো আমরা কিভাবে?? থাকবো সেভাবেই, যেভাবে ছিলাম আমাদের মায়ের পেটে.. একজন সন্তান যখন মায়ের গর্ভে থাকে, জরায়ুর ভেতরের অন্ধকার তাকে ভীত করে না.. সেখানকার একাকীত্বে সে বিষন্নও হয় না.. কতবার সে হাত-পা ছুড়ে, আনন্দ করে, একজন মা বাইরে থেকেও তা বুঝতে পারেন.. আমাদের কবরের জীবনটাও অনেকটা এরকমই বাহ্যিকভাবে, নিকষ কালো অন্ধকারে আমি একা — ভীতিকর মনে হলেও এর কোনো প্রভাব একজন মুমিনের উপর পড়ে না.. তার কবর তো তার জন্য জান্নাতের টুকরো, ভয় সে পাবেই বা কেন? অসংখ্য ফেরেশতারা তাকে মোবারকবাদ জানানোর জন্য থাকবে সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত “নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হবে এবং বলবে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোনো” [সুরা ফুসসিলাত, আয়াত ৩০] আর তাই, একজন বুদ্ধিমানের উচিত মৃত্যুকে ভয় না পাওয়া কবরের অন্ধকার আর একাকীত্বকে ভয় না করা বরং আল্লাহর আযাব ও শাস্তিকে ভয় করা.. মৃত্যু তো আসবেই, তিনি যদি শাস্তি দেন, অন্ধকার কবরে দাফন না হলেও ভয়ের মাঝেই থাকতে হবে আর যাকে তিনি নাজাত দিবেন সে মাটির নিচে চাপা থাকলেও থাকবে নিশ্চিন্তে শান্তিতে...
Posted By: Ashes
Post ID: 6384
Posted on: 5 years 5 months ago
Authorized by: ChatGirl