এই বইটি খুব বিখ্যাত একটি বই। এই বইটি পড়ে কাঁদে নি এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না। এমনকি বাংলাদেশের বড় বড় লেখক, কবি,সাহিত্যিক পযন্ত এই বই পড়ে চোখের জল ফেলেছেন। আমি নিজেও খুব কেঁদে ছিলাম বইটি পড়ে।
তাই ভাবলাম বইটির রিভিউ দিই।
বাংলায় একটি কথা আছে, “মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।” অর্থাৎ জীবনে দুঃখ দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ দুঃসময়ের পরেই আসবে সুসময়। তবে এই পৃথিবীতে সবার ক্ষেত্রে এই কথাটা খাটে না। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা ভাগ্যের গ্যাঁড়াকলে পিষ্ট হয়ে সারাটা জীবন শুধু দুঃখই পেয়ে যান, সুখ তাদের কাছে বহুদূরের এক মরীচিকা হিসেবেই থেকে যায়। এমনই এক চিরদুঃখী মানুষকে নিয়ে প্রখ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক ভিক্টর হুগো রচনা করেন সর্বকালের অন্যতম সেরা উপন্যাস, নাম ‘লা মিজারেবল’।
পুরো উপন্যাস আবর্তিত হয়েছে জাঁ ভালজাঁর জীবন কাহিনীকে ঘিরে। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে বড় বোনের সংসারে মানুষ হতে হয়েছিলো তাকে। তবে সাত সন্তানকে নিয়ে তার বোনও ছিল অথৈ সাগরে। তাই সেখানেও অভাবের যাতনা লেগেই ছিল। জাঁ ভালজাঁ যখন ২৫ বছরের যুবক তখন আচমকা তার ভগ্নীপতি মারা গেলেন। দুর্দিনে আশ্রয় দেওয়া বোনের সংসার চালানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলো সে।
সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে এত বড় সংসার চালিয়ে নিচ্ছিলো জাঁ ভালজাঁ। তবে এক শীতে কাজ না পেয়ে দারুণ অর্থাভাবে পড়ে গেলো সে। শেষপর্যন্ত সাতটি ছোট্ট শিশুকে ক্ষুধার জ্বালা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে সে রুটি চুরি করলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ধরা পড়ে গেলো সে, তার সমস্ত কাকুতিমিনতি উপেক্ষা করে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
এমন বিচারে সমাজের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে এলো জাঁ ভালজাঁর মনে। এই সমাজ গরীবকে কাজ দিতে পারে না, ক্ষুধার্তকে অন্ন দেয় না, কিন্তু নিতান্ত পেটের দায়ে যদি চুরি করে, তাকে নির্মম শাস্তি দিতে মুহূর্ত দেরি করে না। সাজা মেনে নিতে না পেরে বারবার পালাতে লাগলো জাঁ ভালজাঁ, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রতিবারই ধরা পড়ে গেলো। আর প্রতিবার ধরা পড়ার সাথে তার সাজার মেয়াদও বাড়তে লাগলো। শেষপর্যন্ত পাঁচ বছরের সাজা খাটতে এসে সে বের হলো উনিশ বছরের সাজা খেটে!
৪৬ বছরের প্রৌঢ় ভালজাঁ জেল থেকে বের হয়েও শান্তি পেলো না, 'পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়' এই কথাটা সেই সময়ের ফরাসি সমাজ ভুলেই গেছিলো। সব জায়গায় প্রত্যাখ্যাত হয়ে ভালজাঁ যখন হতাশ হয়ে পড়েছিলো, তখন তার জীবনে আশার প্রদীপ হয়ে আসেন বিশপ মিরিয়েল। তার কাছ থেকে পাওয়া সাহায্য নিয়ে অলঙ্কারের ব্যবসা করে অল্প সময়ে ধনী হয়ে যায় জাঁ ভালজাঁ।
বাকিটা পরে দিবো🙂
Posted By: disabled_28344
Post ID: 6767
Posted on: 3 years 3 months ago
Authorized by: yamazaki