FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

রোমাঞ্চ গল্প # ভুতুড়ে এক শহরে রূপার খোঁজে ২২ বছর ।

রোমাঞ্চ গল্প # ভুতুড়ে এক শহরে রূপার খোঁজে ২২ বছর ।

*

ক্যালিফোর্নিয়ার এক ভুতুড়ে শহর শেরো গর্ডোর একমাত্র বাসিন্দা রবার্ট লুইস ডেমারাইস।

হারিয়ে যাওয়া রূপার এক খনির খোঁজে গত ২২ বছর যাবত একাই রয়ে গেছেন এই পাহাড়ি শহরটিতে।

স্প্যানিশ ভাষায় শেরো গর্ডো শব্দের মানে সমতল পাহাড়। এই পাহাড়েই এক সময় ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে বড় রূপার খনিগুলো।

ডেমারাইস ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক, ক্লাসে পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে এসে খুঁজতেন এ গুহা, সে গুহা।

কিন্তু পরে চাকরী ছেড়ে দিয়ে একেবারে স্থায়ীভাবে চলে এসেছেন, তার বিশ্বাস এখনো কোন পাথরের খাঁজে লুকিয়ে আছে বিপুল রূপার মজুদ।

এজন্য খালি হাতে কেবল হাতুড়ি, বাটাল আর শাবল দিয়ে আটশো ফুট জায়গা খুঁড়েছেন নিজ হাতে। একদিন তিনি রূপার খোঁজ পাবেন, এই বিশ্বাস তার অটল।

একেবারে কিছুই পাননি তিনি, তাও নয়।

বিভিন্ন সময় এক ঠেলাগাড়ি সমপরিমাণ ছোট ছোট রূপার টুকরো পেয়েছেন, যা সেখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে তিনি বিক্রি করেন।

ছোট ছোট টুকরোগুলো পাঁচ ডলার থেকে সর্বোচ্চ ২০ ডলার পর্যন্ত দামে বিকোয়।

##থাকার কী ব্যবস্থা##

শহরের এখানে সেখানে কয়েক বছর কাটিয়ে দেবার পর ডেমারাইসকে একজন পাহাড়ের উঁচুতে একটি পরিত্যক্ত কেবিনে থাকতে দেন।

সেটি ছিলো উইলিয়াম হান্টার নামে এক খনি শ্রমিকের বাড়ি।

বাড়িটা এত উঁচুতে যে, সেখান থেকে পুরো শহরটা দেখা যায়।

উচ্চতার জন্য ডেমারাইসের স্ত্রী তাকে ছেড়ে নেভাডা চলে গেছেন।

তবে শেরো গর্ডোতে যারা বেড়াতে আসেন, তাদের আগ্রহ নিয়েই চারপাশ ঘুরিয়ে দেখান ডেমারাইস।

এমনকি পর্যটকদের তিনি খনির ভেতরেও নিয়ে যেতে আগ্রহী।

কিন্তু শহরের মালিক লস এঞ্জেলসের ব্যবসায়ী ব্রেন্ট আন্ডারউড এবং জন বায়ের সে অনুমতি একেবারেই দেন না।

##শহরটি কিনেছেন ব্রেন্ট আর জন##

গত জুলাইতে প্রায় দেড় মিলিয়ন ডলার দিয়ে ভুতুড়ে শহর শেরো গর্ডো কিনেছেন ব্রেন্ট আর জন।

ডেমারাইসের মত তাদেরও ধারণা এখানকার খনিতে এখনো বিপুল পরিমাণ রূপা আছে। আর একদিন হারানো রূপার খনি খুঁজে পাবার ক্ষেত্রেও তাদের বিশ্বাস অভিন্ন।

শহরের নতুন মালিকেরা ভুতুড়ে শহরটিতে প্রাণ ফেরাতে রাতে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করেছেন।

##তারা জ্বলা আকাশ##

তারা জ্বলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা ডেমারাইসের প্রিয় অবকাশ।

শহরের পুরনো সিনেমা হলটি নতুন করে চালুর পরিকল্পনা করছেন ব্রেন্ট।

এছাড়া নতুন করে গাছ লাগিয়ে, বিশেষ করে শহরে হঠাৎ করে আগুন লেগে যাওয়া ঠেকাতে বেশি করে আঙ্গুর চাষের পরিকল্পনা নতুন মালিকদের।

শেরো গর্ডোর পুরনো মালিক শহরটি দেখে রাখতে বলেছিলেন ডেমারাইসকে, তিনি খুশিমনেই বিনা পারিশ্রমিকে সেটা করতেন।

কিন্তু নতুন মালিকেরা তাকে শহরের কেয়ারটেকার নিযুক্ত করেছেন।

##পাহাড়ে ডেমারাইসের জীবন##

রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঠ কাটতে যান ডেমারাইস।

পাহাড়ে বিদ্যুৎ আছে, কিন্তু পানি নেই। তাই রোজ পার্শ্ববর্তী শহর থেকে এক লরি পানি আনতে হয়।

শেরো গর্ডো থেকে ১৫ মাইল দূরের আরেক শহর থেকে খাবার, ও অন্যান্য গৃহস্থালি জিনিস কিনতে হয়।

লোন পাইন নামে ওই শহরে দোকানপাট, ক্যাফে, হোটেল আর বার আছে।

ডেমারাইস যেদিন সেখানে বাজার করতে যান, হাতে খানিক সময় নিয়ে যান, আর ক্যাফে বা বারে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে আসেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই তার।

এখনো রাতে পাহাড়ে শুয়ে তারা জ্বলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা তার প্রিয় অবকাশ।

পাহাড়ের জন্তু জানোয়ার আর সেখানকার অনিশ্চিত জীবনই ডেমারাইসের পছন্দের।

# #Source : BBC News Bangla (৪ অগাস্ট ২০১৯)##

*




1 Comments 502 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024